বুধবার, ২৯ মে ২০২৪, ০২:২৬ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
নেগেটিভ সনদ নিয়েও ৩ শতাধিক পজিটিভ

নেগেটিভ সনদ নিয়েও ৩ শতাধিক পজিটিভ

স্বদেশ ডেস্ক:

বাংলাদেশ থেকে করোনা নেগেটিভ সনদ নিয়ে বিভিন্ন দেশে গিয়ে পজিটিভ শনাক্তের ঘটনা বাড়ছে। ফলে বিদেশের মাটিতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে সংশ্লিষ্ট যাত্রীদের। গত এক মাসে বাংলাদেশ থেকে করোনা পরীক্ষার নেগেটিভ সনদ নিয়ে বিদেশে যাওয়া অন্তত তিন শতাধিক যাত্রী সংশ্লিষ্ট দেশে আরটি পিসিআর পরীক্ষায় পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন।

বিভিন্ন দেশ হতে প্রাপ্ত রিপোর্ট অনুযায়ী এদের কারও মধ্যে কোভিড ১৯-এর লক্ষণ ছিল না এবং বাংলাদেশে ল্যাবরেটরি পরীক্ষায় তারা সবাই আরটি পিসিআর পরীক্ষায় নেগেটিভ সনদ পেয়েছিলেন। ফলে বাংলাদেশি যাত্রীদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান হারে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হত্তয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন দেশ। যা নিয়ে উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরও। এ বিষয়ে গত ১৮ এপ্রিল আইইডিসিআর পরিচালককে চিঠি দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

জানা গেছে, বাংলাদেশ থেকে বিমান, স্থল বা নৌপথে সব যাত্রীকে বিদেশ যাওয়ার সময় কোভিড-১৯ টিকা দেওয়া থাকুক বা না থাকুক, যাত্রা শুরুর ৭২ ঘণ্টা বা তার কম সময় বাকি থাকতেই নমুনা দিয়ে আরটি পিসিআর টেস্ট করিয়ে করোনা নেগেটিভ সনদ নিতে হয়। হেলথ স্ক্রিনিং কার্যক্রমে নিয়োজিত স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা আরটি পিসিআর সনদটি ওয়েবসাইটে মিলিয়ে এর সত্যতা পরীক্ষা করেন।

ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের কোভিড-১৯ আরটি পিসিআর নেগেটিভ সনদ নিশ্চিতপূর্বক সম্পন্ন করেন বোর্ডিং। কিন্তু আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্যবিধি ২০০৫-এর আইএইচআরের ধারা ৪৪ (২০০৫)-এর সহযোগিতা এবং সহায়তা নির্দেশনা অনুযায়ী বিভিন্ন দেশের ন্যাশনাল আইএইচআর ফোকাল পয়েন্ট কর্তৃক ঘোষণাপত্রে দেখা যায়, গত এক মাসেই প্রায় ৩শর বেশি যাত্রী সংশ্লিষ্ট দেশে আরটি পিসিআর পরীক্ষায় পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন। যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন দেশ। ইতোমধ্যে এ কারণে গত ১৬ এপ্রিল দক্ষিণ কোরিয়া সরকার বাংলাদেশিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। অভিবাসনসংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ বিষয়ে এখনই প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা না নিলে অন্যান্য দেশও একই ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। যা হবে দেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

এদিকে বিদেশ গমনেচ্ছুক যাত্রীর করোনা পরীক্ষায় পজিটিভ রেজাল্ট আসার পর স্বল্পসময়ে আবার পরীক্ষার সুযোগ না দিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছিলেন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ জামিল। গত ২৬ এপ্রিল স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবের দপ্তরে এ চিঠি দেওয়া হয়।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, জনৈক ব্যক্তির মাধ্যমে প্রাপ্ত একটি অভিযোগ যাচাই করতে গিয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ জামিল জানতে পারেন, আলী হোসেন নামে এক দুবাই প্রবাসী বিদেশ যেতে গত ২৩ এপ্রিল ডিএনএ সলিউশন লিমিটেড নামে ল্যাবে নমুনা দেন। ওই দিনই তিনি কোভিড পজিটিভ রেজাল্ট পান। কিন্তু তিনি ওই রেজাল্টের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না হয়ে আইসোলেশনে না গিয়ে পরদিন সিএসবিএফ হেলথ সেন্টার নামে আরেকটি প্রতিষ্ঠানে ফের নমুনা দিয়ে সেদিনই নেগেটিভ রেজাল্ট পান। পরে এই নেগেটিভ রিপোর্ট দেখিয়ে তিনি গত রবিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে ইকে-৫৮৩ ফ্লাইটে দুবাই চলে যান। এতেই প্রতীয়মান হয় যে, বিদেশ গমনেচ্ছু যাত্রীদের অনেকেই পরীক্ষা করিয়ে পজিটিভ রেজাল্ট আসার পর ফ্লাইট টাইমের আগে জরুরি প্রয়োজন দেখিয়ে পুনরায় অন্য কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হতে পরীক্ষা করাচ্ছেন। সেখানে নেগেটিভ রেজাল্ট পেলে তা দেখিয়ে বিদেশ পার হচ্ছেন।

স্বল্পতম সময়ের মধ্যে পুনরায় পরীক্ষায় রেজাল্ট বদলে ফেলার এরূপ সুযোগ থাকায় বিদেশ গমনেচ্ছ যাত্রী ও তাদের স্বজনদের একাংশের মধ্যে বিদ্যমান সিস্টেমের প্রতি অনাস্থা তৈরি হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে বিদেশ গমনেচ্ছু কোনো যাত্রী যেন একবার কোভিড পজিটিভ হওয়ার পর যুক্তিযুক্ত সময় অতিক্রান্ত না হওয়া পর্যন্ত ফের পরীক্ষা করাতে সমর্থ না হন, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্বাস্থ্য বিভাগকে অনুরোধ করা হচ্ছে।

গোটা বিষয়ে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এম মফিদুর রহমান বলেন, করোনা ভাইরাস এমন একটি শত্রু, যা থেকে আমাদের সবাইকে সাবধান থাকতে হবে। আমরা মূলত কোয়ারেন্টিনের ওপর জোর দিচ্ছি।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877